রাজশাহীর তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে অবৈধ সেচ পাম্পের পরিত্যক্ত বোরহোলে পড়ে দুবছরের শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দেশ।
যে ব্যক্তি বোরহোলটি খুঁড়েছিলেন, আওয়ামী লীগ কর্মী সেই কছির উদ্দিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। মাটির প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধারের পর প্রথমে অবহেলার অভিযোগ তুলে বিচার দাবি করলেও এখন মামলা করতে চান না শিশুটির বাবা রাকিবুল ইসলাম। এনিয়ে জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়, বইছে মুখরোচক নানা গুঞ্জন, প্রতিনিয়ত গুঞ্জনের ডালপালা মেলছে। আবার অনেকে এ বিষয়ে উচ্চ আদালত ও মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আল্লাহর মাল আল্লাহই নিয়েছেন। আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মামলা করব না। তিনি জানান, পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগে অবহেলার অভিযোগ তুলে বিচার চাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, সেটা বলেছিলাম যেন গোটা দেশ সতর্ক হয়। এই ভুলটা আর কেউ যেন না করে- এই জন্যই কথাটা বলেছিলাম। আমার বাচ্চাটা যেভাবে গেছে, সবাই যদি আগে থেকেই সচেতন হয়, তাহলে ইনশাল্লাহ এমন ক্ষতি আর হবে না। আমার ঘটনার মধ্য দিয়ে যদি অন্যরা শিক্ষা পায়, সেটাই চাই।
মামলা না করতে কোনো ধরনের চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ওপর কোনো চাপ নেই। গোটা দেশ আমাদের পক্ষে আছে। ইনশাল্লাহ পুলিশ-প্রশাসনও আমাদের পাশে আছে।
পলাতক কছির উদ্দিন এলাকায় ফিরে কোনো সহানুভূতি জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, না। উনি এখনও এলাকায় আসেননি। আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেননি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশেই কছির উদ্দিনের জমিতে থাকা অবৈধ সেচ পাম্পের ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের পরিত্যক্ত বোরহোলে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৩১ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর বৃহস্পতিবার রাতে মাটির ৫০ ফুট নিচ থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সাজিদের মা রুনা খাতুন শুরু থেকেই বিচার দাবি করে আসছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কছির উদ্দিন আমার বাড়ির পাশে এভাবে তিন জায়গায় গর্ত করে ফেলে রেখেছে। কেন এভাবে ফেলে রাখল, গর্তগুলো কেন বন্ধ করল না? আমি বিচার চাই।’ তবে রহস্যজনক কারনে তার স্বামী রাকিবুল ইসলাম বর্তমানে মামলা করতে আগ্রহী নন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কছির উদ্দিন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। তার ভাই আব্দুল করিম স্থানীয় ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে দলের টিম সদস্য, যা একটি সম্মানজনক পদ হিসেবে বিবেচিত। কছির উদ্দিন আগে বিদেশে ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি পানি ব্যবসা শুরু করেন এবং এলাকায় পাঁচটি অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) স্থাপন করেন। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এসব সেমিডিপ চালানো হচ্ছিল। পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন বলে আলোচনা রয়েছে।
বছর খানেক আগে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই আরও একটি সেমিডিপ বসাতে বোরহোল করান কছির উদ্দিন। মাটির প্রায় ৯০ ফুট গভীরে যাওয়ার পর পাথর উঠতে থাকায় তিনি পরপর তিনটি স্থানে বোরহোল করেন। তবুও পানির সন্ধান না মেলায় সেখানে সেমিডিপ বসানো হয়নি। সেই পরিত্যক্ত বোরহোলগুলোর একটিতেই পড়ে যায় শিশু সাজিদ, যা তার করুণ মৃত্যুর কারণ হয়।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান বলেন, কছির উদ্দিনের অবহেলার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমের পরিবার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পদাধিকার বলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি হিসেবে ইউএনও জানান, কছির উদ্দিনের আগে থেকে থাকা কয়েকটি সেচপাম্প বৈধ কি না, তা যাচাই করা হবে। তবে যে বোরহোলে পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, সেটির জন্য কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এটি ছিল বেআইনি কাজ।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খান বলেন, সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত কছির উদ্দিন আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
যে ব্যক্তি বোরহোলটি খুঁড়েছিলেন, আওয়ামী লীগ কর্মী সেই কছির উদ্দিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। মাটির প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধারের পর প্রথমে অবহেলার অভিযোগ তুলে বিচার দাবি করলেও এখন মামলা করতে চান না শিশুটির বাবা রাকিবুল ইসলাম। এনিয়ে জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়, বইছে মুখরোচক নানা গুঞ্জন, প্রতিনিয়ত গুঞ্জনের ডালপালা মেলছে। আবার অনেকে এ বিষয়ে উচ্চ আদালত ও মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আল্লাহর মাল আল্লাহই নিয়েছেন। আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মামলা করব না। তিনি জানান, পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগে অবহেলার অভিযোগ তুলে বিচার চাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, সেটা বলেছিলাম যেন গোটা দেশ সতর্ক হয়। এই ভুলটা আর কেউ যেন না করে- এই জন্যই কথাটা বলেছিলাম। আমার বাচ্চাটা যেভাবে গেছে, সবাই যদি আগে থেকেই সচেতন হয়, তাহলে ইনশাল্লাহ এমন ক্ষতি আর হবে না। আমার ঘটনার মধ্য দিয়ে যদি অন্যরা শিক্ষা পায়, সেটাই চাই।
মামলা না করতে কোনো ধরনের চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ওপর কোনো চাপ নেই। গোটা দেশ আমাদের পক্ষে আছে। ইনশাল্লাহ পুলিশ-প্রশাসনও আমাদের পাশে আছে।
পলাতক কছির উদ্দিন এলাকায় ফিরে কোনো সহানুভূতি জানিয়েছেন কি না জানতে চাইলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, না। উনি এখনও এলাকায় আসেননি। আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেননি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশেই কছির উদ্দিনের জমিতে থাকা অবৈধ সেচ পাম্পের ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের পরিত্যক্ত বোরহোলে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৩১ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর বৃহস্পতিবার রাতে মাটির ৫০ ফুট নিচ থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সাজিদের মা রুনা খাতুন শুরু থেকেই বিচার দাবি করে আসছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কছির উদ্দিন আমার বাড়ির পাশে এভাবে তিন জায়গায় গর্ত করে ফেলে রেখেছে। কেন এভাবে ফেলে রাখল, গর্তগুলো কেন বন্ধ করল না? আমি বিচার চাই।’ তবে রহস্যজনক কারনে তার স্বামী রাকিবুল ইসলাম বর্তমানে মামলা করতে আগ্রহী নন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কছির উদ্দিন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। তার ভাই আব্দুল করিম স্থানীয় ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে দলের টিম সদস্য, যা একটি সম্মানজনক পদ হিসেবে বিবেচিত। কছির উদ্দিন আগে বিদেশে ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি পানি ব্যবসা শুরু করেন এবং এলাকায় পাঁচটি অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) স্থাপন করেন। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এসব সেমিডিপ চালানো হচ্ছিল। পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন বলে আলোচনা রয়েছে।
বছর খানেক আগে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই আরও একটি সেমিডিপ বসাতে বোরহোল করান কছির উদ্দিন। মাটির প্রায় ৯০ ফুট গভীরে যাওয়ার পর পাথর উঠতে থাকায় তিনি পরপর তিনটি স্থানে বোরহোল করেন। তবুও পানির সন্ধান না মেলায় সেখানে সেমিডিপ বসানো হয়নি। সেই পরিত্যক্ত বোরহোলগুলোর একটিতেই পড়ে যায় শিশু সাজিদ, যা তার করুণ মৃত্যুর কারণ হয়।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান বলেন, কছির উদ্দিনের অবহেলার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমের পরিবার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পদাধিকার বলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি হিসেবে ইউএনও জানান, কছির উদ্দিনের আগে থেকে থাকা কয়েকটি সেচপাম্প বৈধ কি না, তা যাচাই করা হবে। তবে যে বোরহোলে পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, সেটির জন্য কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এটি ছিল বেআইনি কাজ।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খান বলেন, সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত কছির উদ্দিন আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
আলিফ হোসেন